হাওজা নিউজ এজেন্সি: আল-কুরআনও এ বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন, “তাদের সম্পদ থেকে জাকাত গ্রহণ করো, যাতে তা তাদের শোধন এবং পরিশুদ্ধ করে।” (সূরা আত-তাওবা, আয়াত ১০৩)
এই আয়াত দ্বারা বোঝা যায় যে, ইনফাক কেবল সামাজিক সাহায্যের সীমাবদ্ধতা নয়; এটি আত্মিক উন্নতি এবং ব্যক্তিত্ব গঠনের একটি প্রক্রিয়া, যেমন উদ্ভিদ পানি পেলে সুস্থভাবে বৃদ্ধি পায়।
ইনফাক (দান) কেবল ক্ষুধা মেটানোর মাধ্যম নয়
আয়াতুল্লাহ শহীদ মুর্তজা মুতাহহারী তাঁর এক রচনায় বলেন, ইনফাককে (দান) শুধুমাত্র “দরিদ্রদের পেট ভরানোর উপায়” হিসেবে দেখা ভুল। এমন ধারণা অন্য মাধ্যমে সম্ভব, তবে ইনফাকের (দান) মূল উদ্দেশ্য হলো মানব চরিত্র গঠন। আত্মত্যাগ, দান এবং উদারতার মাধ্যমে মানুষের আত্মা ধীরে ধীরে মানবীয় গুণাবলীতে পরিপূর্ণ হয়।
তিনি আরও বলেন, কেউ বলে, “আমি কনাআ’হ (যা আছে তাতে সন্তুষ্ট), আমি এক মুঠো বাদাম দিয়েই বেঁচে থাকতে পারি এবং কিছু চাই না, তাই আমি নিখুঁত।” এটি ভুল।
সত্যিকারের নিখুঁততা কখনো অভাবের মধ্যে নয়; বরং অর্জন ও দানের মধ্যে। যা নেই এবং যা দেওয়া হয়নি, তা কখনো পূর্ণতা নয়; বরং অর্জন করা এবং দান করা মানব চরিত্র গঠনের মূল চাবিকাঠি।
আল্লাহর নির্দেশ এবং আত্মশুদ্ধি
আল্লাহ তায়ালা বলেন, “তাদের সম্পদ থেকে জাকাত গ্রহণ করো, যাতে তা তাদের শোধন এবং পরিশুদ্ধ করে।”
এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, ইনফাক হলো আত্মশুদ্ধি এবং চরিত্র গঠনের মাধ্যম, শুধুমাত্র সামাজিক সাহায্য নয়। যেমন উদ্ভিদ পানি পেলে সুস্থভাবে বৃদ্ধি পায়, তেমনই দান আত্মার অহংকার ও খারাপ অভ্যাস দূর করে।
মানুষের প্রতিটি জীবন্ত দেহের মতো, তার আত্মাতেও কিছু "কীট" থাকে অহংকার, খারাপ অভ্যাস ও স্বার্থপরতা। ইনফাক এই নেগেটিভ গুণ দূর করার প্রক্রিয়া, যা হৃদয়কে পরিশুদ্ধ করে এবং আত্মাকে বিকশিত করে।
ইনফাক কেবল অর্থ দেওয়া নয়। এটি মানুষের চরিত্র গঠন এবং আত্মা পরিশুদ্ধ করার গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে, নিখুঁততা কখনো সম্পদ বা দারিদ্র্যের মধ্যে নয়; বরং দান ও শেয়ার করার সক্ষমতায় নিহিত।
দান কেবল অন্যকে সাহায্য নয়, বরং নিজের আত্মাকেও পরিশুদ্ধ করে। একজন মুসলিমকে মনে রাখতে হবে, ইনফাককে তার আত্মিক যাত্রার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে গ্রহণ করতে হবে, যেমন আল-কুরআন নির্দেশ দিয়েছেন।
আপনার কমেন্ট